রাষ্ট্র সংস্কারে ও দেশের টেকসই উন্নয়নে যা যা করা প্রয়োজন (নিয়মিত আপডেট করার চেষ্টা করবো):
দুই টার্ম এর বেশি কেউ ক্ষমতায় থাকতে পারবেনা, এমন কনস্টিটিউশনাল আমান্ডমেন্ট দরকার আমাদের। এই দেশে সব রাষ্ট্রনায়ক চায় আজীবন ক্ষমতায় থাকতে।
কনস্টিটিউশন পরিবর্তনের জন্য ন্যাশনাল রেফারেন্ডাম এ ভোট করতে হবে।
বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ফিনান্সিয়াল লিটারেসি কম। ডিজিটাল লিটারেসি বাড়াতে ডিজিটাল টেকনোলজি নামের বিষয় শিক্ষাক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু ফিনান্সিয়াল লিটারেসি এর সাবজেক্ট নাই কেন?
ময়লা আবর্জনা ম্যানেজমেন্ট এর একটা সিস্টেম করতে হবে। যাতে ময়লা রিসাইকেল করে সার ও প্লাসিক যত দ্রব উৎপাদনের বেবস্তা করা যায়। সব জেলাতেই ছোট একটা করে প্লান্ট থাকলে ভালো হবে।
Ease of Doing Business Index এ আমাদের দেশের অবস্থান খুবই খারাপ। এইটা ৫০ এর ভিতরে আনার টার্গেট নিয়ে কাজ করতে হবে। https://archive.doingbusiness.org/en/rankings এইটা এতো কঠিন কিছুনা, চাঁদাবাজি সম্পূর্ণ বন্ধ এবং পুলিশের দুর্নীতি বন্ধ করলেই আমরা অনেক আগাতে পারবো। আমাদের ইন্টারনেটের দামে, বিশেষ করে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সার্ভিসের ক্ষেত্রে আমরা অনেক পিছিয়ে। তার উপর গুন্ডাবাজির কারণে অনেক জায়গায় আমাদের বেশি দাম দিয়ে নেট কিনতে হয়। এইসব তার কেটে দেয়া বা একচেটিয়া বেবসা বন্ধ করতে হবে। কম্পিটিটিভ মার্কেট হলে আমরা কম দামে বেশি স্পিড পাবো।
পুলিশের সব ধরনের BD-08 Assault Rifle জব্দ করে, আইন করে নিষিদ্ধ করতে হবে। পুলিশ ৫০০ মিটার রেঞ্জ এর রাইফেল দিয়ে কি করবে? এইটাতো আর্মির অস্ত্র। আর কোথাও যদি দরকার লাগেও (ধরেন সন্ত্রাসীদের হাতে ওই অস্ত্র আছে) সে ক্ষেত্রে এন্টি-তেরোর ইউনিট SWAT কে ডাক দিবে। রেগুলার পুলিশ ফোর্সের কাছে এইটা না থাকলেই ভালো।
পেলেট গুলি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে। এইটা একটা টর্চার এর অস্ত্র। যেসব দেশে মানবাধিকার আছে সেখানে এই ধরণের গুলির ব্যবহার আমি দেখিনা বললেই চলে। কত মানুষ অন্ধ হচ্ছে এর কারণে।
পুলিশ জনসাধারণের সাথে অনেক দুর্ব্যবহার করে। আমার সাথেও এমন হয়েছে একদিন। আবার আমাকে একবার মিথ্যা মামলায় বা চোরির অভিযোগে জড়ানোর ঘটনাও ঘটে পুলিশের সাথে কিন্তু পরে তারা সেটাকে ভুলবোজাবুজি হিসেবে আখ্যা দেয়। এই রকম অভিজ্ঞতা আরো অনেক অনেক মানুষেরই আসে। এইটা বন্ধ করার জন্য পুলিশের আচরণবিধি জরুরি। যাতে পুলিশ জনসাধারণের সাথে সুন্দরভাবে আচরণ করে। তার পাশাপাশি পুলিশের তেমন কোনো জবাবদিহিতা নাই। জবাবদিহিতা নিচিত করার জন্য শুধুমাত্র দুদক এই কাজ করে। কিন্তু আমরা জানি যে দুদক নিজেই অনেক দুর্নীতির সাথে জড়িত।
পুলিশের জবাবদিহিতা নিচিত করার জন্য দুদক ছাড়াও আরো একটি সংস্থা, যেমন মানবাধিকার কমিশন এর ক্ষমতা বাড়িয়ে পুলিশ কুকর্ম করলে সেটার তদন্ত সাপেক্ষে মামলা করার পাওয়ার দিলে ভালো হতে পারে। তবে মানবাধিকার কমিশন যাতে দলীয় চাটুকার না হয় তার ও বেবস্থা করতে হবে। সেক্ষেত্রে আমরা ইউনাইটেড নেশনস বা অন্য ইন্টারন্যাশনাল বডির হেল্প নিতে পারি।
বিচার বহিঃর্ভুতভাবে কেউ পুলিশ হেফাজতে মারা গেলেই পুলিশকে তার জন্য দায়ী করা উচিত। আর রিমান্ডের নামে নির্যাতন ও বন্ধ করতে হবে। আর kneecapping বন্ধ করতেই হবে। যারা এই কাজে জড়িত, তাদের সবাইকে চাকরিচ্যুত করতে হবে এবং জেলে পাঠাতে হবে আজীবনের জন্য। হিউমান রাইটস ওয়াচ এর উপর বিস্তারিত প্রতিবেদন তৈরী করেছে: https://www.hrw.org/news/2016/09/29/bangladesh-stop-kneecapping-detainees
BCS এ চুরি কোটা নিষিদ্ধ করতে হবে। চুরি করে যারা নিয়োগ পেয়েছে, তাদের চাকরিচ্যুত করতে হবে।
কাল আরো কিছু আপডেট দেব ইনশাআল্লাহ।
https://www.observerbd.com/news.php?id=230768
যেহেতু বাংলাদেশের প্রায় সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নতুন উপাচার্য নিয়োগ দিতে হবে তাই আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কিভাবে প্রেসিডেন্ট (বাংলাদেশের ক্ষেত্রে উপাচার্য) নিয়োগ হয় তা আপনাদের কাছে তুলে ধরলাম
১. প্রথমে উপাচার্য নিয়োগের জন্য একটি সার্চ কমিটি গঠন করা হয় যেখানে সকল কলেজের শিক্ষকদের প্রতিনিধি, ছাত্রদের প্রতিনিধি, স্টাফদের প্রতিনিধি এবং লোকাল কমিউনিটির প্রতিনিধি থাকে ।
২. উপাচার্য নিয়োগের জন্য উন্মুক্ত ন্যাশনাল সার্চ করা হয় যেখানে উপাচার্যের অভিজ্ঞতা হিসাবে তার লিডারশিপ কোয়ালিটি, শিক্ষক ও গবেষক হিসাবে তার যোগ্যতা চাওয়া হয় । উপাচার্য হওয়ার জন্য প্রার্থীকে অবশ্যই প্রভোষ্ট বা ডীন হিসাবে পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকতে হয় । আমেরিকায় প্রভোষ্ট হলো সকল কলেজের প্রধান এবং ডীন হলেন যিনি সবগুলো বিভাগের প্রধান । বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রভোষ্টের সাথে আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রভোষ্টের কাজের কোনো মিল নেই ।
৩. উপাচার্য পদের জন্য পাওয়া আবেদনকারীদের কভার লেটার, সিভি, লিডারশিপ অভিজ্ঞতা, শিক্ষক ও গবেষক হিসাবে তার অভিজ্ঞতা, এবং পাঁচ বছরের ভিশনের লিখিত ডকুমেন্টের উপর যাচাই বাছাই করে ৫-১০ জনের একটি সট লিষ্ট করা হয় ।
৪. সটলিষ্টে থাকা প্রার্থীদের ফোন ইন্টারভিউ নেওয়া হয়, সার্চ কমিটির সকল সদস্য উপস্হিত থাকেন সেই ইন্টারভিউতে । সকল প্রার্থীকে একই প্রশ্ন করা হয় । ফোন ইন্টারভিউ থেকে সবচেয়ে যোগ্য তিনজনকে ক্যাম্পাস ইন্টারভিউের জন্য ডাকা হয় ।
৫. ক্যাম্পাস ইন্টারভিউটি একদিন বা দুইদিনের জন্য হয় যেখানে প্রত্যেক প্রার্থীদেরকে প্রভোষ্ট ও সকল ডীনের সাথে সাক্ষাত করতে হয় । এছাড়া অনেকগুলো প্রেজেন্টেশান দিতে হয় যেখানে ৫ বছরের ভিশন কি হবে এবং শিক্ষা ও গবেষণায় তার পরিকল্পনা কি হবে তা সকলের নিকট উপস্হাপন করতে হয় । এই প্রেজেন্টেশানগুলো ক্যাম্পাসের সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকে এবং সকলে রেটিং প্রদান করতে পারে ।
৬. ক্যাম্পাস ইন্টারভিউটির পর পুরো কমিটি প্রার্থীদের পারফরমেন্সের উপর তিনজন প্রার্থীর মধ্যে বেষ্ট প্রার্থীকে সিলেক্ট করেন । বেষ্ট প্রার্থীকে প্রথমে অফার দেওয়া হয়, তিনি অফার গ্রহন না করলে দ্বিতীয় বেষ্টকে অফার দেওয়া হয় । প্রার্থী অফার একসেপ্ট করলে তা স্টেটের গভর্নর কার্যকর করেন ।
আইটি সেক্টরের সত্যিকারের উন্নতি করতে চাইলে
১. ইন্টারনেট: সুলভ মূল্যে নিরবিচ্ছিন্নভাবে সারাদেশে কোয়ালিটি ইন্টারনেট (১০-২৫ MBPS) নিশ্চিত করতে হবে। starlink নিয়ে আসার পাশাপাশি-- মোবাইল অপারেটরদের ইচ্ছামত ডাকাতি মার্কা ইন্টারনেট এর দাম নির্ধারণ করতে দেয়া যাবে না। সরকারের পক্ষ থেকে এক রেটে সবাই ইন্টারনেট চালাবে। কোনভাবেই একটা ভবন এর উপরে সারা দেশের ব্রডব্যান্ড নির্ভর করতে দেয়া যাবে না। দুইদিন পর পর অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল কাটা পড়ে সেই ঘটনা ঘটতে দেয়া যাবে না। আর যত কিছুই হোক, ইন্টারনেট বন্ধ করা যাবে না। একটা পাসনকে যেন ইন্টারনেটের তিনটা লাইন ম্যানেজ করা না লাগে।
২. ইলেক্ট্রিসিটি: বিদ্যুতের স্থায়ী সমাধান করতে হবে। আইপিএস, ইউপিএস, ব্যাটারি ব্যাকআপ নিয়ে মাথা নষ্ট হতে দেয়া হবে না। জিরো লোডশেডিং এর লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে এগুতে হবে। তার আগে লোডশেডিং হতে বাধ্য হলে সেটা একটা ফিক্সড রুটিনে নিয়ে আসতে হবে। এবং কোন নির্ভরযোগ্য ওয়েবসাইট এ গিয়ে দেখতে পারবে এবং সেটা ১০০% মেইনটেইন করতে হবে।
৩. ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট সার্ভিস: ফ্রিল্যান্সার তার প্রথম ইনকাম ব্যাংকে ঢুকাবে, একজন ইন্টারন্যাশনাল রিমোট জব করে তার স্যালারি পাবে-- সেটা না। এইটা নিয়ে ভোগান্তির শেষ নাই। তাই যত দ্রুত সম্ভব: ইজি এবং পপুলার ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট সিস্টেম নিয়ে আসতে হবে। যাতে ফ্রিল্যান্সার বা রিমোট যারা জব করে তারা ইন্সট্যান্টলি বা ২৪ ঘন্টার মধ্যে টাকা ব্যাংক একাউন্টে ঢুকে যায়। সেটা পেপ্যাল হোক বা অন্য কিছু হোক। একাউন্ট খোলা ভেরিফিকেশন এবং ট্রানজেকশন যেন গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ন্ড এ হয়।
৪. ইন্টারন্যাশনাল ক্রেডিটকার্ড এবং বিল পে: পোলাপান একটা AWS এর একাউন্ট খুলতে পারে না। কোন ছোটখাটো টুলস বা প্যাকেজ কিনতে পারে না। একটা সার্ভিস ট্রাই করবে সেটাও করতে পারে না। তাছাড়া কোম্পানিগুলো AWS, কিংবা কোন সার্ভিসের বিল পে করতে পারে না। ১০০০ ডলার ফি দিতে গেলে ১৩৫০-১৪৫০ ডলার খরচ করতে হয়। দশ জায়গায় ঘুরতে হয়। লিমিট শেষ হয়ে যায়। এক্সট্রা চার্জ দিতে হয়। দেরি হয়।
৫. কোম্পানি ট্রানজেকশন: একটা কোম্পানির ইন্টারন্যাশনাল ইনকাম দেশে ঢুকাতে যে কি পরিমাণ হ্যাসেল হয়। এনার্জি, আগ্রহ হারিয়ে ফ্রাস্ট্রেটেড হয়ে যায়। আর কোন কারণে দেশের বাইরে ইনভেষ্ট করতে গেলে বা ডলার পাঠাতে গেলে বা ইন্টারন্যাশনাল ইমপ্লয়ী হায়ার করতে গেলে তো জীবন শেষ। তখন বাধ্য হয়ে কম্পানিগুলো তাদের ইন্টারন্যাশনাল ইনকাম সিঙ্গাপুর বা দুবাই এর ব্যাঙ্ক একাউন্টে রেখে দেয়। আর যতটুকু দেশে না আনলেই নয় সেগুলা দেশে নিয়ে আসে। এমনকি ইনসেনটিভ দেয়ার কথা বলার পরেও কোম্পানিগুলো ডলার দেশে আনে না। কারণ আনলেই বিপদে পড়ে। এইটার একটা সলিড সমাধান দরকার।
৬. CSE ডিগ্রিটাকে মডার্ন এবং প্রাকটিক্যাল বানাতে হবে। ফান্ডামেন্টাল সাবজেক্টগুলো প্রথমে দিয়ে। কম প্রয়োজনীয় সাবজেক্টগুলো কমিয়ে/বাদ দিয়ে। ৫-৬টা মেজর দিয়ে দিতে পারে। তারপর স্টুডেন্ট তাদের মতো করে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, এপ ডেভেলপমেন্ট, গেম ডেভেলপমেন্ট, মেশিন লার্নিং, AI, ডাটা সায়েন্স, রোবোটিক্স, ব্লকচেইন, ভার্চুয়াল রিয়ালিটি ইত্যাদি এরিয়াতে মেজর করতে পারবে। যাতে CSE ভালোভাবে পড়ে একটা স্টুডেন্ট ক্যারিয়ারে প্রবেশ করতে পারে।
৭. গ্লোবাল জব ফেয়ার: আমাদের জব সেক্টর ছোট। মানুষ বেশি। তাদেরকে স্কিল্ড করে গ্লোবাল জব ফেয়ার অর্গানাইজ করতে হবে। টেক ফিল্ডের জন্যতো অবশ্যই। এর বাইরেও মার্কেটিং, একাউন্টিং, ইলেক্ট্রিক্যাল ডিজাইন, প্লানিং, সহ দাপ্তরিক অনেক অনেক কাজ বাংলাদেশ বসের বিশ্বের যেকোন দেশে করা সম্ভব। সেগুলার একটা হাব বানাতে হবে।
. ৮. আইটি এন্টারপ্রেনারশিপ: উদ্যেক্তা না আসলে কর্মসংস্থান বাড়বে না। বিশেষ করে লোকাল মার্কেটের বাইরে ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটের জন্য বিজনেস করার, সলিড কিছু ইনিশিয়েটিভ যাবে।
৯. ফ্রিল্যান্সিং: এই সেক্টরের সম্ভবনা অনেক অনেক বেশি। কিন্তু এইটাকে ফর্মাল একটা সেক্টরে রূপ দিতে হবে। দেশে কারিগরি শিক্ষা বা অন্য কোনভাবে ফর্মাল এডুকেশন এর মাধ্যমে ইন্টারন্যাশনাল ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের জন্য দক্ষ জনবল গড়ে তোলার সাসটেইনেবল ইনিশিয়েটিভ যাবে। নচেৎ সিগনিফিকেন্ট গ্রোথ আসবে না।
১০. সরকারি সার্ভিসগুলো ১০০% ডিজিটাল করতে হবে। যাতে বাসায় বসে সব করে বাসায় সেটা পাঠিয়ে দেয়া যায়। অনলাইনে ফর্ম ফিলাপ করে সেটা আবার প্রিন্ট করে নিয়ে গিয়ে, দালালের পিছনে ঘুরতে না হয়। বাংলাদেশকে গ্লোবাল আইটি নেশন গড়ার জন্য প্রাথমিকভাবে এইগুলা আমার চাওয়া (সরকার এবং প্রাইভেট সেক্টরের কাছে) [ এই লিষ্টে কি কিছু যোগ করা বা মোডিফাই করা উচিত ?]